জলপাইগুড়ি জেলের পাঁচিল টপকে উড়ে আসছে মোবাইল ফোন, গাঁজা, মদের বোতল। না, এটা কোনও গুপি-বাঘার কীর্তি নয়। জেলের অভ্যন্তরে দাগি দুষ্কৃতীদের কীর্তি। মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলে অতর্কিতে হানা দেন এআইজি (কারা) কল্যাণকুমার প্রামাণিক। তাঁর নির্দেশে জেলের আনাচে কানাচে যৌথ তল্লাশি চালান কারারক্ষী এবং পুলিশ কর্মীরা। বাগানের মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় ২৫টি মোবাইল ফোন। যার মধ্যে বেশির ভাগই অ্যানড্রয়েড। ব্যবহারের পর প্লাস্টিকে মুড়ে যা পুঁতে রাখা হয়েছিল মাটির নিচে। এছাড়া সেলের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর গাঁজার পুরিয়া, মদের বোতল এবং ধারালো অস্ত্রও।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলের চারপাশ জাল দিয়ে আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ। এআইজি (কারা) বলেন, “ভগবান নিশ্চয় আকাশ থেকে ফেলেননি। প্রাথমিক তদন্তে পরিষ্কার আকাশপথেই জেলের প্রাচীর টপকে ভিতরে ঢুকছে মোবাইল ফোন, গাঁজা, মদের বোতল।” জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলের জেলার রাজীব রঞ্জন বলেন, “এর আগেও প্রাচীরের ওপার থেকে মোবাইল ফোন, মদের বোতল উড়ে আসতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।” তবে এবার এত সংখ্যক মোবাইল ফোন উদ্ধারের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে জেল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, ফোনগুলি নিয়মিত ব্যবহার করা হত। অ্যানড্রয়েড ফোনগুলির নেটের ব্যবস্থাও ছিল। যার মাধ্যমে নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক চলত। ইতিমধ্যেই ফোনগুলিকে খতিয়ে দেখছেন জেল কর্তৃপক্ষ। জেলের বাইরে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হত তা-ও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেল সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “১৪০০-র বেশি বন্দি রয়েছে এই জেলে। সেখানে রক্ষীর সংখ্যা হাতেগোনা। এই অবস্থায় সর্বত্র নজরদারি সম্ভব নয়। তবু জেলের ভিতর যে কোনও অপরাধমূলক ঘটনা আটকাতে সবরকমের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এবার জেলের ভিতর দেওয়াল টপকে মদ,গঁাজা,মোবাইল ফোনের প্রবেশ আটকাতে জেলের চার পাশে নেটের ব্যবস্থা করতে চলেছেন শুভব্রতবাবুরা। যাতে বাইরে থেকে কিছু ছুড়ে দেওয়া হলে জালে আটকে যায়। পাশাপাশি চারপাশে যাতে সিসি ক্যামেরা লাগানো যায় সেই প্রস্তাবও পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

0 comments:
Post a Comment