স্বামী হারা অনেক বিধবাই সরকারি দফতরে হত্যে দিয়েও বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত৷ অথচ স্বামী বেঁচে থেকেও বহাল তবিয়তে বিধবা ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন এক মহিলা৷ এক, দু’মাস নয় টানা সাড়ে তিন বছর ধরে সিঁথিতে সিদুঁর পরেই দিব্যি পঞ্চায়েত অফিস থেকে বিধবা ভাতার টাকা তুলছেন কল্পনা রায়!
ঘটনাটি হুগলির তারকেশ্বর ব্লকের সন্তোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার৷ বিষয়টি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ লিখিত অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে ব্লক প্রশাসনও৷ তারকেশ্বরের বিডিও জয়গোপাল পাল বলেন, ‘‘গুরুতর অভিযোগ৷ বিষয়টি জানতে পারার পরই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তদন্তে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে৷’’
সন্তোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু মহিলা বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত৷ আবেদন নিবেদন করেও তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ৷ এবিষয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা যদুনাথ বাগ জানতে পারেন, এলাকার বহু বিধবা তাঁদের ভাতা থেকে বঞ্চিত হলেও গুড়িয়া গ্রামের কল্পনা রায় দিব্যি বিধবা ভাতা পাচ্ছেন গত সাড়ে তিন বছরে৷ যদুনাথবাবুর কথায়, ‘‘কল্পনাদেবীর স্বামী বেঁচে রয়েছেন৷ তিনি নিয়মিত মুদিখানা দোকানেও বসেন৷ তা সত্ত্বেও এহেন মহিলা কি করে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন তা জানতে চেয়ে বিডিও-কে চিঠি দিয়েছি৷’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, কল্পনাদেবী তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য৷ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্যার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ৷ সেই সুবাদেই কল্পনাদেবীর নাম বিধবা ভাতায় উঠেছে বলে অভিযোগ৷ স্বভাবতই সরকারি প্রকল্পে স্বজনপোষণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে৷ এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অভিযুক্ত কল্পনাদেবীর নির্লিপ্ত জবাব, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে একটা ভাতা পেয়ে থাকি৷ তবে সেটা কিসের ভাতা, আমি জানি না৷’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর পাঠানো তালিকার ভিত্তিতেই নাম চূড়ান্ত করা হয়৷ যদিও প্রসঙ্গটি প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অলক ঘোষ বলেন, ‘কোন প্রকল্পে উনি ভাতা পান সেটা আমি বলতে পারব না৷’’ বিষয়টি সামনে আসতেই হুগলি জুড়ে জোর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে৷ বিধবা ভাতা থেকে বঞ্চিত যোগ্য প্রাপকরা আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন৷

0 comments:
Post a Comment