
জঙ্গি নিধন নিয়ে যখন ভারত পাক উত্তেজনা চরমে, তার মধ্যেই খবর এল জইশ ই মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার মারা গিয়েছে।
কোনও সরকারি সূত্রে এখনও এই খবরকে মান্যতা দেওয়া হয়নি। এমনকী পাকিস্তান সরকারও কোনও বিবৃতি দেয়নি। তবে খবর সঠিক হওয়ার চূড়ান্ত সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাসুদ আজহারের মৃত্যুর দুটি সম্ভাবনা উঠে আসছে। প্রথমত, ভারতের এয়ার স্ট্রাইকে আহত হয়ে সেই আঘাত সামাল দিতে না পেরেই মারা গিয়েছে আজহার। এই তথ্য যেমন উঠে এসেছে। পাশাপাশি অন্য তথ্যও রয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরেই তার অসুস্থ থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। পাকিস্তানের সেনা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল বলে জানা যায়। কিডনির অসুখে ভুগছিল মাসুদ। নিয়মিত ডায়ালিসিসও করানো হচ্ছিল।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, মাসুদ আজহারের মৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানের মাটিতেই।
উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি স্বীকার করেছিলেন যে পাকিস্তানেই রয়েছে মাসুদ আজহার। তবে খুব অসুস্থ। বাড়ি থেকে বেরোনোর ক্ষমতা নেই। একেবারে শয্যাশায়ী। তার চিকিতসা চলছে।
মাসুদ আজহার বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিল। মূত্রাশয়ে সংক্রমণ হওয়ায় রওয়ালপিণ্ডির সেনা হাসপাতালে তার ডায়লিসিস চলছিল। সেখানেই অবস্থার অবনতি হওয়ায় সে মারা গিয়েছে বলে আর এক সূত্রে খবর এসেছে।
ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের পর এক সাক্ষাৎকারে পাক বিদেশমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানেই রয়েছে জইশ-ই-মহম্মদের এই প্রধান, কিন্তু সে অসুস্থ৷ তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মাসুদ এতোটাই অসুস্থ যে বাড়ি থেকে বেরনোর ক্ষমতাও তার নেই৷
ভারত বরবারই বলে এসেছে মাসুদের মতো জঙ্গিকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। পুলওয়ামা হামলার পরই খবর পাওয়া যায়, কিডনিতে কাবু মাসুদকে রীতিমতো সেনা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছে পাক সরকার।
আরও জানা গিয়েছিল যে, কিডনিও আর কাজ করছে না এই জঙ্গিনেতার। পুলওয়ামা ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ আজহার মারা গিয়েছে, সেই খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে।
হামলার সময় মাসুদ আজহার ওই ঘাঁটিতে ছিল কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কোনও সূত্র বলছে, মাসুদ আজহার সেইসময় ঘাঁটিতেই ছিল। হামলায় আহত হয় জঙ্গি নেতা। যদিও অন্য সূত্র বলছে, মাসুদ আজহার ঘাঁটিতে ছিল না।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার একাধিক যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে ঢুকে মাসুদ আজহারের ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়ে আসে। হামলায় মাসুদের গোটা পরিবারকে কার্যত নিকেশ করে দিয়ে এসেছে এয়ারফোর্স।
আকাশ থেকে ছোঁড়া একের পর এক বোমার আঘাতে দাঁড়াতেই পারেনি জঙ্গিরা। নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করে মিরাজ ২০০০ বিমান থেকে লেজার গাইডেড বোমা। সেই বোমার আঘাতেই মাসুদ আজাহারের ২ ভাই ও শালার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। মৃত্যু হয়েছে মাসুদ আজাহারের ভাই তলহা সইদ, ইব্রাহিম আজহারের, মৃত্যু হয়েছে কাশ্মীরে জইশের প্রধান আজহার খান।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জৈশের জিহাদি স্কুল ধ্বংস করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। রেডিওবার্তায় স্বীকার করে নিল মাসুদ আজহারের ভাই মৌলানা আম্মার। সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া সেই পাওয়া সেই রেডিও বার্তার স্বর পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে সেটি মাসুদ আজহারের ভাই মৌলানা আম্মার। ভারতীয় বায়ুসেনার বোমাবাজিকে মার্কাজ বলেছে সে এবং স্বীকার করে নিয়েছে খাইবার পাখতুনখওয়ায় জৈশের জিহাদি স্কুল ধ্বংস হয়েছে। রেডিওবার্তায় সে বলেছে 'ভারতীয় বায়ুসেনা পাহাড় অতিক্রম করে ইসলামিক সেন্টারে হামলা চালিয়েছে। এটা শত্রুপক্ষের যুদ্ধের বার্তা বলে মনে করি আমরা।'

0 comments:
Post a Comment