প্রকাশ্যে গোমাংসের পালটা শূকরের মাংস খাওয়াবে শিবসেনা



প্রকাশ্যে গোমাংসের পালটা শূকরের মাংস খাওয়াবে শিবসেনা৷

প্রকাশ্যে গোমাংস খেয়ে যে সব বুদ্ধিজীবী অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন, তাঁদের এ বার শূকরের মাংস খেয়ে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে৷

তবে, শুধুমাত্র ওই বুদ্ধিজীবীদেরও নয়৷ সম্প্রীতি রক্ষার লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের সব বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিকের কাছেই প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ার জন্য আর্জি রাখা হচ্ছে৷ এবং, এই আমন্ত্রণ-আর্জি জানাচ্ছে এ বার পশ্চিমবঙ্গের শিবসেনা৷

আগামী শুক্রবার, ২৯ জুন প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ানোর জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এ রাজ্যের শিবসেনা৷


এ রাজ্যে শিবসেনার সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র অশোক সরকার জানিয়েছেন 

‘‘যে সব বুদ্ধিজীবী ধর্মতলায় প্রকাশ্যে গোমাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, শূকরের মাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্য তাঁদের আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি৷ আগামী শুক্রবার বিকালে প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ানোর জন্য আমরা কর্মসূচি নিয়েছি৷’’

তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং কবি সুবোধ সরকারকেও শূকরের মাংস খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে৷

শুধুমাত্র তাই নয়৷

অশোক সরকার আরও বলেন, ‘‘সব বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিককে প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি৷’’


শূকরের মাংস খাওয়ানোর জন্য কেন এই কর্মসূচি?

রাজ্য শিবসেনার সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার বলেন,

‘‘ধর্মনিরপেক্ষ হিসাবে প্রমাণ এবং প্রতিবাদের জন্য যে সব বুদ্ধিজীবী প্রকাশ্যে গোমাংস খেয়েছিলেন, তাঁরা কি সম্প্রীতি রক্ষায় প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাবেন?

 না, কি, কোনও সম্প্রদায়কে তুষ্ট করার জন্য তাঁরা প্রকাশ্যে গোমাংস খেয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন?’’

তিনি আরও বলেন,

‘‘হিন্দুত্ব রক্ষায় আমাদের এই কর্মসূচি৷’’৷

‘‘গোমাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানানো গেলে শূকরের মাংস খেয়েও প্রতিবাদ জানানো উচিত৷’’


গোমাংস বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কয়েকটি রাজ্যের তৎপরতার প্রতিবাদে, ২০১৫-র ৩০ অক্টোবর ধর্মতলায় প্রকাশ্যে গোমাংস খাওয়ার মাধ্যমে প্রতিবাদের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল৷ ভাষা ও চেতনা সমিতির ওই কর্মসূচিতে অন্যান্যদের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, তৃণমূল কংগ্রেস পন্থী হিসাবে পরিচিত কবি সুবোধ সরকার এবং বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা শামিল হয়েছিলেন৷ অন্যান্য বুদ্ধিজীবীর পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও শামিল হয়েছিলেন প্রকাশ্যে গোমাংস খাওয়ার ওই প্রতিবাদ-কর্মসূচিতে৷


কিন্তু, প্রায় তিন বছর পরে ওই কর্মসূচির পাল্টা হিসাবে কেন প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহণ করল এ রাজ্যের শিবসেনা?

ওয়াকিবহাল মহলের বিভিন্ন অংশ এমনই মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ উঠছে৷


এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে, এ রাজ্যে এ বার জনভিত্তি বৃদ্ধি করতে চাইছে শিবসেনা৷ এবং, তার জন্য হাতিয়ার হিসাবে হিন্দুত্বকে বেছে নেওয়া হয়েছে৷

এই অবস্থায়, জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে, গোমাংসর পালটা হিসাবে প্রকাশ্যে এ বার শূকরের মাংস খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এ রাজ্যের শিবসেনা৷
Share on Google Plus
JanaSoftR

0 comments:

Post a Comment