রাহুল গান্ধী কি এখনও রাজনৈতিকভাবে 'সাবালক' হয়ে ওঠেননি? গান্ধীগিরি দেখাতে গিয়ে ছেলেমানুষি বেরিয়ে এসেছে।
প্রশ্নটা উঠেছিল শুক্রবার দুপুর থেকে। ঝাঁজালো বক্তৃতা দিলেন। তারপরই সংসদীয় নিয়ম-শৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।
সে-পর্যন্তও না হয় মানা গেল। কিন্তু তারপর? নিজের আসনে ফিরে গিয়ে পাশে বসা সতীর্থ সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে রাহুলের 'চোখ টেপা'র ছবি দুপুরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
বিরোধী মহলেই আক্ষেপ, এ তো আত্মঘাতী গোল! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর জবাবি ভাষণে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন, আরও কিছুটা নাটক করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের 'চোখ মারা' নিয়ে নিয়ে ঝড় উঠেছে। তবে সেখানে মশকরার ভাবটাই বেশি। সঙ্গে নিন্দাও। কাজটা যে তিনি ভাল করেননি, দেরিতে হলেও তা সম্ভবত বুঝেছেন রাহুল। তাই সে ব্যাপারে আর বাক্য ব্যয় করতে চান না।
কিন্তু রাহুলের ওই 'গান্ধীগিরি' অনেকটাই লঘু হয়ে গেছে চোখ টেপার দৃশ্যে। কাজটা করেছেন এমন একজন, যিনি আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস ভাল ফল করলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
দলেরই অনেকে আড়ালে বলছেন, 'গান্ধীগিরি দেখাতে গিয়ে ভেতরের ছেলেমানুষি বেরিয়ে এসেছে।'
প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে জড়িয়ে ধরার ব্যাপারটা নিয়ে সভায় কাল অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। নিন্দায় সরব বিজেপি নেতারা, প্রত্যাশিতভাবেই।
অরুণ জেটলি ফেসবুকে লিখেছেন, 'কারও ভাষণ তুচ্ছ ভাবা উচিত নয়। কিন্তু যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চান, তাঁর কাছে অজ্ঞতা, মিথ্যা এবং ছলাকলার আশ্রয় নেওয়া কাম্য নয়।
সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটিও। এগুলো মোটেই ছেলেমানুষির বিষয় নয়।'
প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের সাহারাণপুরে এক জনসভায় রাহুলের আলিঙ্গনকে 'অবাঞ্ছিত' আখ্যা দিয়েছেন।
ভাষণে তাঁকে চোখে চোখ মেলানোর জবাবি ভাষণে রাহুলের নিন্দা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'সত্যিই তো! আপনার চোখে চোখ রাখার ধৃষ্টতা আমার মতো গরিব মায়ের ছেলের নেই। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এসেছি। নিচুজাতের ছেলে। একজন চা-ওয়ালা ছিলাম। আপনি তো নামদার। আর আমি কামদার।'
তারপর রাহুল ও তাঁর দলকে আরও আক্রমণ করে বলেছেন, 'আসলে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে চোখ মেলানোর ফল কী হতে পারে তা আমি জানি।
সুভাষচন্দ্র, মোরারজি দেশাই, জয়প্রকাশ নারায়ণ, চৌধুরি চরণ সিং, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, চন্দ্রশেখররা আপনাদের চোখে চোখ রেখেছিলেন। তাঁদের কী পরিণতি হয়েছে, সেই ইতিহাস কারও অজানা নয়।'

0 comments:
Post a Comment