মোদীকে হঠাতে রাজ্যে বিরোধ থাকলেও কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে জাতীয়স্তরে জোটের বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিইয়ে রাখলেন আগামী দিনে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটের সম্ভবনা।
রাজধানীর যন্তর মন্তরে কেজরির ধরনাকে সমর্থন জানিয়ে এদিন হাজির হন বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এ দিনের ধরনা মঞ্চ থেকে আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন, যে যেখানে শক্তিশালী, সে সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে।
এদিন তৃণমূল নেত্রী বলেন, ''দিল্লিতে কেজরিওয়াল লড়বে। অন্ধ্রে চন্দ্রবাবু লড়বে। বাংলায় আমি লড়াই করব। একটাও আসন যেন ওরা না পায়।''
তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিলেন, রাজ্যে কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে লড়াই থাকলেও জাতীয়স্তরে জোটে রাজি তিনি। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, সপা-বসপার পর কি এবার চিরশত্রু সিপিএম-তৃণমূলকে মিলিয়ে দেবেন নরেন্দ্র দামোদার মোদী?
দিল্লিতে কেজরিওয়ালের ধরনায় হাজির হয়ে মমতার বার্তা, মোদীকে হঠাতে এককাট্টা হয়ে লড়াই করতে হবে। সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে রাজ্যে লড়াই হলেও জাতীয়স্তরে জোটে আপত্তি নেই তাঁর।
তৃণমূল নেত্রী বলেন আমি বড় মনে সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার বিরুদ্ধে লড়াই করো কিন্তু দেশের স্বার্থে জীবন দিতে রাজি। দলকেও উত্সর্ করে দেব। আমি নাও থাকতে পারি। সাধারণ কর্মী হিসেবেই নিশ্চিত করব, মোদী যাতে না আসে। মোদী হঠাও দেশ বাঁচাও''।
তৃণমূল কংগ্রেসের দেশের অন্য প্রান্তে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। তিনি বলেন, ''আমি অনেক আসনে লড়াই করতে পারি। কিন্তু করি না। যেখানে অন্য দল শক্তিশালী, সেখানে ভোট বাঁটোয়ারা করব না। রাজ্যে একাই লড়াই লড়ব। যদিও আমার বিরুদ্ধে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়ে লড়বে। এসব অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। ৪২-এ ৪২টি আসন পাব। যেখানে যে রাজনৈতিক দল শক্তিশালী, সেখানে তিনি লড়াই করবেন। উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা, দিল্লিতে আপ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে। ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে কংগ্রেস শক্তিশালী, সেখানে ওরা লড়াই করবে। দিল্লিতে সাতে সাত করতে হবে আপকে''।
তিনি বলেন, ''ডেমোক্রেসি নয়, এখন নমোক্রেসি চলছে। ওদের বিরুদ্ধে কথা বললেই জেলে পুড়ে দেওয়া হচ্ছে। জরুরি অবস্থা চলছে।'' প্রধানমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, ''আজ সংসদে ওঁর শেষ দিন। আর কয়েকদিন যা করার করে নিন। নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে, কমিশনের হাতে আইন-শৃঙ্খলা হলে যাবে। তখন আর কিছু করতে পারবেন না। কী করবে মোদি সরকার? জেলে ভরবে? খুন করবে? এজেন্সি পাঠাবে? আমরা ভয় পাই না। আমরা লড়াই করতে জানি।''
এদিন দুপুরেই সংসদে চিটফান্ড ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। চিটফান্ড ইস্যুতে মমতাকে তুমুল আক্রমণ করেন অধীরবাবু। অধীরের বক্তব্যে খুশি বিজেপি সাংসদরা টেবিল বাজিয়ে সমর্থন জানান। আর এর পরেই বেজায় ক্ষুব্ধ হন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। সঙ্গে সঙ্গে মমতা জানিয়ে দেন, কংগ্রেসের সঙ্গ আর নয়। লোকসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে যোগাযোগ না করার নির্দেশ দেন নেত্রী।
এরপরই সংসদের সেন্টার হলে সনিয়া-মমতা একান্তে সাক্ষাত্ করেন। সেখানেই মমতাকে সন্ধির বার্তা দেন সনিয়া। সনিয়ার কথায়, যাই বিরোধ থাকুক না কেন, দিনের শেষে আমরা এক। সনিয়া গান্ধীর এক কথাতেই ম্যানেজ হয়ে গেলেন মমতা।

0 comments:
Post a Comment