পুলওয়ামার ঘটনার পর থেকে বদলা নেওয়ার দাবিতে ফুঁসছে গোটা দেশ। শুধু দেশবাসীই নয়, শহিদের রক্ত যে বিফলে যাবে না সেই ইঙ্গিত ইতিমধ্যে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পাকিস্তানেকে আর নদীর জল দেবে না ভারত। কড়া সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের। বৃহস্পতিবার সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী নীতীন গড়করি। ভারতের যে নদীগুলির জলের ভাগ পাকিস্তানকে দেওয়া হত সেগুলি আর দেওয়া হবে না। তার পরিবর্তে সেই পরিমাণ জল জম্মু-কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের জন্য দেওয়া হবে।
শুধু সামরিক দিক থেকেই নয়, কূটনৈতিকভাবেও পাকিস্তানকে জবাব দিতে ছক কষছে ভারত। কী ভাবে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করা যায় তা নিয়ে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করছেন রাজনাথ। ইতিমধ্যে সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ বা মোস্ট ফেভারড নেশনস-এর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। ফলে পাকিস্তানি আমদানিকৃত পণ্যের শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ শতাংশ। পাকিস্তানে চা, টমেটো রফতানি বন্ধ করছে ভারত।
সোশ্যাল মিডিয়াতে কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রী জানান, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও জল শেয়ার করবে না। যে সমস্ত নদী পাকিস্তানের দিকে গিয়েছে সেগুলির পথও বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আর সেই পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের মুখে তুলে দেওয়া হবে বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছেন নিতিন গড়কড়ী। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে নিশ্চিতভাবে জলসংকট তৈরি হবে পাকিস্তানে।
সাহাপুর এবং কাণ্ডিতে রবি নদীর উপর জলাধার তৈরি করা হচ্ছে। সাধারণ রবি নদীর জলই পাকিস্তান বেশি পেয়ে থাকে। এবার থেকে আর রবি নদীর জল পাকিস্তানকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন নীতীন গড়করি।
পুলওয়ামা হামলা নিয়ে পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিতেই জল ভাগাভাগি নিয়ে এই চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশে ৮,৫৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা করতে গিয়ে নিতিন গডকড়ী বলেন,'পাকিস্তানের দিকে বয়ে গিয়েছে তিনটি নদী। ওই তিনটি নদীর জল এবার যমুনাতে ফেলার প্রক্রিয়া চলছে। ফলে যমুনা নদীতে জলের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে'।
তিনটি নদীর জল খালের মাধ্যমে ফেলা হবে যমুনায়। যমুনা নদীতে তৈরি হবে বন্দর। ওই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও মায়ানমারে পাঠানো হবে চিনি। তিনটি নদীর সঙ্গে যমুনাকে জোড়ার ফলে নতুন জলপথ তৈরি হবে।
চা রফতানিকারকরা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, পাকিস্তানকে বয়কট করছেন তাঁরা। অর্থাত্ তাঁদের উত্পাদিত চা পাকিস্তানে রফতানি করা হবে না। এবার সেই পথেই হাঁটলেন মধ্যপ্রদেশের টমেটো চাষীরা।
তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশে উত্পাদিত টমেটো কোনওভাবেই পাকিস্তানের মাটি ছোঁবে না। রাজ্যের ঝাবুয়া জেলার টমেটো চাষীরা এইভাবেই জওয়ান শহিদ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে চাইছেন।
উরির হামলার পরই নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, রক্ত ও জল কখনও একসঙ্গে বইতে পারে না। এবার সত্যিই জল বন্ধ করে পাকিস্তানকে মোক্ষম শিক্ষা দিতে চলেছে ভারত।

0 comments:
Post a Comment