জিএসটি এবং নোট বাতিলের পর থেকেই নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে অরুণ জেটলির মতো মন্ত্রিসভার শীর্ষ মন্ত্রীরা বারবার দাবি করছেন এর ফলে আদতে উপকার হচ্ছে অর্থনীতির। অর্থমন্ত্রী জেটলির দাবি ছিল, জিএসটি এবং নোটবাতিলের ফলে বেড়েছে প্রত্যক্ষ করদাতার সংখ্যা। বিরোধীরা সেই অভিযোগ নস্যাত করলেও সরকারি তথ্য কিন্তু মোদি-জেটলিদের দাবিতেই সিলমোহর দিচ্ছে।
আরও বেশি ধনী হল ভারত। গত দু'বছরে ধনীর সংখ্যা বেড়েছে অনেকটা। অন্তত রিপোর্ট সেরকমই। বছরে এক কোটি টাকা রোজগার করছেন, এমন লোকের সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। গত চার বছরে সে ধরনের ধনী ব্যক্তির সংখ্যাটা বেড়েছে ১ লক্ষ ৪০ হাজার। সোমবার সেই রিপোর্ট দিয়েছেন 'সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস' বা CBDT.
সিবিডিটি-র তথ্য বলছে, কর্পোরেট, ফার্ম, হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের করদাতা মিলিয়ে একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে সংখ্যা। তাদের রিপোটডে দেখা যাচ্ছে, বছরে ১ কোটি টাকা রোজগার করে অর্থাত্ কোটিপতির সংখ্যা চার বছরে বেড়েছে ৬৮ শতাংশ।
২০১৪-১৫ সালে ৮৮, ৬৪৯ জন করদাতা ১ কোটির বেশি আয় বলে জানিয়েছিলেন। ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১,৪০,১৩৯ জন। একধাক্কায় সংখ্যাটা বেড়েছে ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে কর্পোরেট সংস্থা, যৌথ পরিবারও ধরা হয়েছে। এমনই বলছে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সের পরিসংখ্যান।
সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সের চেয়ারম্যান সুশীল চন্দ্র বলেছেন, গত চার বছরে নানা উপায়ে চেষ্টা করা হয়েছে যাতে করদাতারা করের টাকা জমা করেন। আর সেজন্যই এভাবে বৃদ্ধি হয়েছে।
একইসঙ্গে সিঙ্গল ট্যাক্সপেয়ার যারা ১ কোটি টাক রোজগার করছে, তাদের সংখ্যা ৪৮,৪১৬ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮১,৩৪৪। এই বৃদ্ধিও ৬৮ শতাংশ। গত চার বছরে আয়কর বিভাগের হিসেব দেখেই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
একইসঙ্গে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্স জানাচ্ছে, আয়কর জমা করার ক্ষেত্রেও চার বছর আগের চেয়ে ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে ৩.৭৯ কোটি মানুষ আয়কর জমা দিতেন। এখন করদাতার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬.৮৫ কোটি জন।
উনিশের ভোটের আগে এই পরিসংখ্যান মোদি সরকারকে বড়সড় স্বস্তি দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। করদাতার সংখ্যার এই বৃদ্ধিকে নোট বাতিল ও জিএসটির সাফল্য হিসেবেও বর্ণনা করা যেতে পারে।

0 comments:
Post a Comment