লোকসভায় পাশ ঐতিহাসিক তিন তালাক বিল। এদিন রাজ্যসভায় আলোচনার পর পাশ করিয়ে নিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। বিলের স্বপক্ষে পড়েছে ২৪৫টি ভোট। বিরুদ্ধে পড়েছে ১১টি ভোট।
তিন তালাক বিল নিয়ে আলোচনায় কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস এটিকে সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু বিল পাশ করতে মরিয়া ছিল বিজেপি সরকার। বিল পাশ হওয়ার পর ওয়াক আউট করে কংগ্রেস ও এআইএডিএমকে সাংসদরা। আলোচনা উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কংগ্রেস সংসদ ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
এদিন লোকসভায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা-বিতর্ক চলার পরে বিল পাশ হয়েছে। সরকার বারবার বলার চেষ্টা করে কীভাবে সুপ্রিম কোর্ট এই তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক ও জুলুম বলে আখ্যা দিয়েছে।
নতুন আইনে তিন তালাক জামিন অযোগ্য অপরাধ হলেও স্ত্রীকে ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলে তবেই ম্যাজিস্ট্রেট মনে করলে অভিযুক্ত স্বামী জামিন পাবেন।
নতুন আইনে আত্মীয় ছাড়া পাড়া-প্রতিবেশী অভিযোগ দায়ের করতে পারবে না। নির্যাতিত মহিলা আদালতে নিজের সন্তানের অধিকার দাবি করতে পারবেন। এবং স্ত্রীর কথা শোনার পর তবেই স্বামীর জামিন নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
শুধু তাত্ক্ষণিক তালাক নয়, নিকাহ হালালা-কেও এই বিল মোতাবেক অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে। এই নিয়ম অনুযায়ী বিবাহ বিচ্ছিন্না স্ত্রীকে তার পুরনো স্বামীর কাছে ফিরে যেতে হলে অন্য পুরুষের সঙ্গে বিয়ে করে শয্যাসঙ্গিনী হতে হবে। তারপর তার অনুমতি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে পুনরায় ঘর করতে পারবেন।
তিন তালাকে অপরাধীদের জেল হাজতের ধারা বাতিলের আবেদন জানানো হয়। তবে তা সরকার শোনেনি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ যুক্তি দেন, অন্য অপরাধের বিল পাশ করানোর সময় বিরোধীরা যখন সম্মত হন, তখন তিন তালাকের অপরাধের সময় একথা কেন তাঁরা মানছেন না!
বিলটির সমর্থনে আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদের যুক্তি ছিল, নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়কে টার্গেট করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। মুসলিম মহিলারা যাতে ন্যায়বিচার পান তার জন্য সচেষ্ট কেন্দ্রীয় সরকার। তাছাড়া এদেশে পণ নিয়ে স্বামীর সাজা হলে কেউ তখন আপত্তি করে না। তাহলে এক্ষেত্রে আপত্তি কেন?

0 comments:
Post a Comment