মেয়েকে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে খুন করল মদ্যপ বাবা। মদ খাওয়ার টাকা চেয়ে না পেয়ে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল এক নিষ্ঠুর বাবার বিরুদ্ধে।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে ঘটল নৃশংস এই ঘটনা। মৃতার নাম সরস্বতী ক্ষেত্রপাল। অভিযুক্ত বাবা শঙ্কর ক্ষেত্রপালকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
মৃতের নাম সরস্বতী ক্ষেত্রপাল। শঙ্কর ক্ষেত্রপালের ছোট মেয়ে। তিন কন্যার বাবা সে। মেমারির কলেজ পাড়ার বাসিন্দা ১৯ বছরের সরস্বতী উচ্চমাধ্যমিকের পরও পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চাইছিল। এই নিয়ে নিত্যদিন অশান্তি করত শঙ্কর।
প্রায়ই মদ খাওয়ার টাকার জন্য মা-মেয়েকে মারধর করত সে। মঙ্গলবার রাতে মেয়ের কাছে মদ খাওয়ার টাকা চেয়েছিল বাবা। তা দেয়নি সরস্বতী।
সরস্বতী বাবাকে মদের টাকার পরিবর্তে ভাত দেয়। ক্ষুদ্ধ শঙ্কর ভাতের থালা ফেলে দেয়। বোতল নিয়ে মেয়ে সরস্বতীর মাথায় মারে। মাথায় চোট পায় সরস্বতী। যন্ত্রণায় বাড়ির ভিতর ঢুকে চাদর ঢাকা দিয়ে শুয়ে পড়ে কিশোরী।
গভীর রাতে শুয়ে থাকা মেয়ের গায়ে এরপর কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় শঙ্কর। মেয়ে যাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে না পারে তাই ঘরের শিকল তুলে দিয়ে বাইরে চলে আসে। জীবন্ত পুড়ে মৃত্যু হয় তার।
জ্বলন্ত অবস্থায় তাও কোনওভাবে সরস্বতী দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু টিউবওয়েলের দিকে যেতেই ফের আটকে দেয় শঙ্কর।
গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে সরস্বতীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় সরস্বতীর। খুনি বাবার কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে এলাকাবাসী।
গরিব বাবাকে সাহায্য করার জন্য অপরের বাড়িতে পরিচারিকার কাজও করত সে। মৃত্যুর আগে মা কল্পনা ক্ষেত্রপাল ও দিদি পিঙ্কিকে সাউকে সব ঘটনা জানিয়ে যায় সে।
স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় শঙ্করকে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পেশ করবে পুলিশ। সরস্বতীর দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সামনের মাঘেই সরস্বতীর বিয়ের কথা স্থির হয়েছিল।

0 comments:
Post a Comment