বিদ্যালয়ে প্রয়োজন বাংলা শিক্ষক, কিন্তু দেওয়া হয়েছে নিস্প্রয়োজন উর্দু মাধ্যমের শিক্ষক। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে এবং বাংলা শিক্ষকের দাবিতে ১৮ সেপ্টেম্বরে পথ অবরোধ করেছিল বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।
পথ অবরোধ আন্দোলনে স্কুল কর্তৃপক্ষ আশ্বাসও দিয়েছিলেন এখনই উর্দুর শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না।
অথচ বৃহস্পতিবার ওই উর্দু শিক্ষকদের কাজে যোগ দেওয়াতে বিদ্যালয়ে আনতে চেষ্টা করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়ে দিয়েছে তারা কিছুতেই বিদ্যালয়ে নিস্প্রয়োজন উর্দু শিক্ষকদের কাজে যোগ দিতে দেবে না। তাদের যুক্তি দ্বারিভিটা বিদ্যালয়ে কোনও উর্দু মাধ্যম বা বিষয়ের ছাত্র ছাত্রীই নেই।
ছাত্রছাত্রীদের আজকের এই আন্দোলনকে বন্ধ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল এমনকি রাবার বুলেট চালাতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের এই পথ অবরোধকে কেন্দ্র করে রনক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের দ্বারিভিটা উচ্চ বিদ্যালয় চত্বর।
ঘটনায় মৃত এক জখম প্রায় কুড়িজন। গুলিবিদ্ধ একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এদিন অবরোধ-বিক্ষোভ চলাকালীন হঠাত্ পুলিশ গুলি চালায় বলে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের অভিযোগ। ওই গুলিতে জখম হয় এক ছাত্র বিপ্লব সরকার, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অভিভাবক মধু বর্মন ও কৃপানাথ সরকার।
এই সংঘর্ষে গুলি বৃদ্ধ হয় রাজেশ সরকার (২৭) নামে দ্বারিভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র।স্থানীয়সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসলামপুর ব্লকের দ্বারিভিটা উচ্চ বিদ্যালয়ে উর্দু মাধ্যমের কোনও ছাত্রছাত্রী না থাকলেও সম্প্রতি বিদ্যালয়ে ৩ জন উর্দু মাধ্যমের শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়। অথচ বিদ্যালয়ে প্রয়োজন বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকের। স্কুল লাগোয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ইসলামপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ছাত্রছাত্রীদের আজকের এই আন্দোলনকে বন্ধ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল এমনকি রাবার বুলেট চালাতে হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মণ্ডল এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুলিশ থেকে সরকারিভাবে কোনও বক্তব্য জানানো হয়নি।
পড়ুয়াদের কথায়, শিক্ষাঙ্গণে গুলি চালানোর সত্যিই কি দরকার ছিল। অন্য কোন পথই কী ছিল না যা এই ছাত্র বিক্ষোভকে সামাল দিতে পারে।
রাকেশের সঙ্গে সঙ্গে জখম হয় ৩ স্কুল ছাত্র-সহ ৮ গ্রামবাসী। রাকেশকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জানা গিয়েছে আহত আরও এক গ্রামবাসীর অবস্থা সঙ্কটজনক।

0 comments:
Post a Comment