মোদী ভক্ত ! প্রশংসা মোদির, মায়ের মুখে প্রস্রাব করে খাওয়ালো তৃণমূল দুষ্কৃতিরা



ছেলে মোদী ভক্ত। তাই মোদির প্রশংসা করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছিলেন তিনি।  সেই কারণে যুবকের মাকে মারধোর করে তাঁর মুখে প্রস্রাব করে খাওয়ানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলী জেলার ধনেখালি গ্রামের রামেশ্বরবাটি এলাকায়। বৃহস্পতিবার রাতে চরম অমানবিক ও লজ্জাজনক এই ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকলেন হুগলির ধনেখালির বাসিন্দারা।

নিগৃহীতা ওই মহিলার নাম সবিতা মণ্ডল। ধনেখালির বোসা রামেশ্বরবাটি এলাকায় বাবা ও মা-কে নিয়ে থাকেন হরিভক্ত মণ্ডল। পেশায় তিনি গৃহশিক্ষক। বাবা রঞ্জিত মণ্ডল পেশায় কৃষক। ওই পরিবারের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সেই সময়েই বৃদ্ধা সবিতাদেবীর মুখে প্রস্রাব করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

হরিভক্ত মণ্ডল কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নিজের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। সেই কারণেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা ওই পরিবারের উপরে হামলা চালিয়েছে।

হরিভক্ত মণ্ডল বলেছেন, "আমি রাতে ছাত্র পড়াচ্ছিলাম। এমন সময় বাড়িতে প্রায় ৩০ জন লোক হামলা চালায়। আমাদের বাড়ির সকলকে খুব মারধোর করা হয়।"

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে যখন ছাত্রছাত্রীদের পড়াচ্ছিলেন হরিভক্ত, তখন বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কতীরা। ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে তারা। ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদ করেছিলেন হরিভক্তের বাবা রঞ্জিত মণ্ডল ও মা সবিতা মণ্ডল। তাঁদেরও রেয়াত করেনি দুষ্কৃতীরা।

ওই ঘটনায় হরিভক্ত এবং তাঁর বাবা রঞ্জিতের পায়ে খুব চোট লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি। শারীরিকভাবে অসুস্থ পরিবারের একমাত্র মহিলা সদস্য সবিতা মণ্ডলকেও রেয়াত করেনি হামলাকারীরা। তাঁর গায়েও হাত তোলা হয়।

প্রহারের চোটে গলা শুকিয়ে আসে অসুস্থ সবিতা দেবীর। বাধ্য হয়ে হামলাকারীদের কাছেই একটু জল চেয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই  এক ব্যক্তি সবিতাদেবীর মুখে প্রস্রাব করে দেয় বলে অভিযোগ করেছেন হরিভক্ত মণ্ডল।

ঘটনার কথা জানতে পেরে ধনেখালি থানায় খবর দেন স্থানীয় বিজেপি নেতা ও কর্মী। বাবা-মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে ধনেখালি হাসপাতালে ভরতি করে পুলিশ।

সেখানে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে তাঁরা সকলেই ওই হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন।

সমগ্র ঘটনায় অত্যন্ত ভীত সমগ্র মণ্ডল পরিবার। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর সাহসটুকুও নেই ধনেখালির অতি সাধারণ পরিবারের আক্রান্তদের। অভিযোগ না পাওয়ায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ।

মোদি ভক্ত ও তাঁর মায়ের উপর হামলার ঘটনার ক্ষুব্ধ গেরুয়াশিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। শনিবার চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে আক্রান্তদের দেখা করেন রাজ্য বিজেপি ওবিসি মোর্চার সভাপতি স্বপন পাল, রাজ্য বিজেপি মহিলা মোর্চার সদস্য বৈশাখী মণ্ডল এবং স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা সকলেই আক্রান্ত ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য নেতা স্বপন পাল জানান, "এই ঘটনা আদিম যুগের বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা এর ধিক্কার জানাচ্ছি। এই ঘটনার প্রতিবাদের ভাষা আমাদের নেই।"

" একটা রাজনৈতিক দল যে এতটা নিচে নামতে পারে তা কল্পনার বাইরে। একজন মহিলাকে যেভাবে প্রস্রাব করে খাওয়ানো হয়েছে তা সভ্য জগতের লজ্জা।"

আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হচ্ছে বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র ফোন করে সমগ্র বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে অসীমাদেবীকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। বিধায়ক মহাশয়া অসীমাদেবী ফোন ধরেননি।

Share on Google Plus
JanaSoftR

0 comments:

Post a Comment